রোজার ঠিক আগে পাইকারি পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৯০-১৯৫ টাকায় বেচার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পোল্ট্রি খাতের বড় চার কোম্পানি। রোজা শুরুর আগের দিন বৃহস্পতিবার ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এক বৈঠকে তাদের এই প্রতিশ্রুতি আসে।
তাতে ব্রয়লার মুরগি পাইকারি পর্যায়ে ৪০ টাকার মতো কমতে যাচ্ছে।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, “এখানে কাজী ফার্মসের মি. কাজী আছেন। উনারা আলোচনা করে সিদ্ধান্তে এসেছেন যে উনাদের ফার্ম থেকে উনারা পাইকারিতে ১৯০-১৯৫ টাকায় বিক্রি করবেন। এখানে সিপি, আফতাব, প্যারাগন ছিল- তারাও একমত হয়েছেন।”
তবে ভোক্তা পর্যায়ে দাম কত হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি মহাপরিচালক।
সফিকুজ্জামান বলেন, “ভোক্তা পর্যায়ে কত হবে তার জন্য আমরা বাজারটা দুই-একদিন দেখব। আগে তারাই ২২০-২৩০ টাকায় বিক্রি করতেন। আজকে উনারা ৪০ টাকা কমালেন। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে কয় হাত ঘুরছে, কী হচ্ছে তা দেখব আমরা, সারাদেশেই তা চেক করা হবে।
“এটা মে বি হতে পারে, আগে বলেছিলাম ২০০ এর বেশি হতে পারে না, আমি নিশ্চিত হতে পারি মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী ২০-৩০ টাকার একটা প্রভাব পড়বে।”
ব্রয়লারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণ দর্শাতে এ দিন শীর্ষ স্থানীয় ৪ উৎপাদক কোম্পানিকে ডেকেছিল অধিদপ্তর। তাদের কারণ দর্শানো শেষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কাজী ফার্মসের কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, “ভোক্তা অধিকারের কাছে অনেক তথ্য ছিল, যা সঠিক না, আবার অনেক ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা যে কয়জন আছি, তাদের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে যে রমজানে ব্রয়লারটা একটা নির্ধারিত দামে আমাদের ফার্ম থেকে বিক্রি হবে।
“পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি আসন্ন রমজানে সহনশীল পর্যায়ে দাম নির্ধারণের ব্যাপারে এগ্রি করলাম যে- এই চারজন রোজার মাসে অন্তত ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় আমাদের ফার্ম থেকে বিক্রি হবে। খাবারের দাম কমলে আরও কমেও বিক্রি হবে।"
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, “গত ৯ তারিখে সভা করে আমরা সরকারের কাছে আটটি রিকমেন্ডেশন দিয়েছি। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের সভা হয়েছে। সেখানে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব ছিলেন।
“তারা জানিয়েছেন, ব্রয়লারের উৎপাদন খরচ ১৬০ এর আশপাশে, খামারি পর্যায়েও তাই। এরই প্রেক্ষিতে চারটি বড় ব্রয়লার উৎপাদনকারী কোম্পানির সাথে আমরা আজ বসেছিলাম। তারা জানিয়েছেন ফিডের দাম আবার বেড়েছে।”
সফিকুজ্জামান বলেন, “আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে তথ্য আছে, আমাদের কাছে সব তথ্য আছে। এতদিন আমরা ইন্টারভেনশন করিনি। এটা জাতির কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার। ঢাকার বাজারে কেজিপ্রতি ব্রয়লার ৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
ব্রয়লারের দামের অস্থিরতা নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, `কাপ্তান বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখলাম ২৪৯ টাকা কেজিতে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে। সারাদেশ থেকে সকালে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি ফার্ম পর্যায়ে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেটিই হাতবদল হয়ে খুচরা পর্যায়ে কোথাও ২৬০ কোথাও ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।`