প্রতিদিন প্রায় ৪০,০০০ ডিম উৎপাদনের পাশাপাশি অয়েষ্টার পোল্ট্রি এন্ড ফিসারীজ লিমিটেড প্রতি বৎসর প্রায় ১০০ মেট্রিক টন চিকেন, ৫০ মেট্রিক টন মাছ এবং বীফ উৎপাদনও শুরু করেছে সম্পূর্ণ মেডিসিন ফ্রি পদ্ধতিতে। অয়েষ্টার চিক্স সিলেটের ব্রয়লার ফার্মারদের নিকট ছিল সর্বাধিক সমাদৃত। বর্তমানে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে বাচ্চা উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে নতুন করে জাায়গা ক্রয় করত: আবারও উৎপাদনে যাওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে অয়েষ্টার পোল্ট্রি এন্ড ফিসারীজ লিমিটেড। উৎপাদন প্রসঙ্গে যাওয়ার পূর্বে বায়ো সিকিউরিটি সম্পর্কে কিছু ধারণা দেয়া দরকার।

আমাদের রয়েছে চার স্তর বিশিস্ট বায়োসিকিউরিটি ব্যবস্থা। প্রথমেই পরিচয় নিশ্চিত করে যথারীতি ডিসইনফেকটেন্ট টানেলের মধ্য দিয়ে নিজেকে জীবানুমুক্ত করেই অফিস বিল্ডিং এ ঢুকতে পারবেন। দ্বিতীয়ত: ড্রেস ও সুজ পাল্টানোর মাধ্যমে যথারীতি দ্বিতীয় ধাপ অতিক্রম করে মূল প্রজেক্টে প্রবেশের প্রস্তুতি নিবেন। তৃতীয়ত: মূল প্রজেক্টে একটি ব্রীজ অতিক্রম করার সময় স্বয়ংক্রীয় পদ্ধতিতে আপনাকে জীবানুমুক্ত করার প্রচেস্টা। এতে আপনি চাইলে পুরো প্রজেক্ট ঘুরে দেখতে পারবেন শুধুমাত্র শেড ছাড়া। চতুর্থত: সর্বোপরি প্রডাকশন রিলেটেড কোন শেডে ঢুকতে চাইলে অবশ্যই কোন না কোন সুপারভাইজার আপনাকে আবারও নিজ হাতে জীবানুনাশক স্প্রে করত: তবেই শেড পরিদর্শন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, সকল শেডের প্রবেশদ্বারে যথারীতি ফুটপাত রয়েছে।

আমাদের রয়েছে একঝাঁক সুপারভাইজার। যারা প্রত্যেকেই একেকটি শেড তথা সুনির্দিষ্ট কাজের দায়িত্ব পালন করছেন। যাদেরকে সার্বক্ষনিক সহযোগীতা করছেন কিছু তরুন যুবক, যাদের কর্মদক্ষতা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল। সিলেট অঞ্চলের গতানুগতিক ধারার বিপরীতে একবারে ফজরের সাথে সাথেই অয়েষ্টারের দিনের কার্যক্রম যথারীতি শুরু হয়, এবং সন্ধ্যা নামার আগেই তাদের জন্য নির্দিষ্ট ৮ ঘন্টা ডিউটি শেষ করে যথারীতি দিনের কাজের সমাপ্তি ঘটান। মাগরিবের পরে সুপারভাইজারগণ তাদের floock এর রিপোর্ট প্রস্তুত করত: ইনচার্জের মাধ্যমে  হেড অফিসে রিপোট প্রেরণ করে তাদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন।

প্রজেক্টটিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয় কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক ব্যবহার না করার জন্য। সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩টি ভ্যাকসিন ও বিভিন্ন ধরনের ডিসইনফেকটেন্ট এর পাশাপাশি নিয়মিত কৃমিনাশক প্রয়োগ করা হয়। ফলে প্রজেক্টে যারা কাজ করে তাদের পরিশ্রম কমে আসে এবং পাশাপাশি প্রায় মাসিক লক্ষাধিক টাকা খরচ সেভ হয়, যার কিছু অংশ সৌন্দর্য বর্ধন বা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যয়িত হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, যেহেতু মুরগীতে সচরাচর প্রচলিত মেডিসিন ব্যবহার করা হয়না, সেহেতু উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রায় ২ থেকে ৩ গুণ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

এবার আসা যাক আমাদের এই প্রজেক্টের মূল উৎপাদন ডিম প্রসঙ্গে। আমাদের ডিমের একটা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ কিছু ডিম আমরা সরাসরি জীবানুনাশক দিয়ে পরিস্কার করে সর্বোচ্চ গ্রেডিং করত: ষ্টিকারিং করে বাজারজাত করে থাকি। এবং সম্ভবত দেশের একমাত্র প্রজেক্ট যেখানে নিজস্ব ফার্মে উৎপাদিত ডিমে স্টিকারিং করে বাজারজাত করা হয় যার সিলেট অঞ্চলে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে আমাদের প্রায় ৪০,০০০ মুরগী উৎপাদনে রয়েছে। এবং অচিরেই One of  the largest agricultural Machineries Manufacturing Company of the World আমেরিকার বিখ্যাত Fortune 500 খ্যাত AGCO কর্পোরেশন কর্তৃক নির্মিত একটি সর্বাধুনিক প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। যাতে আগামী জুলাই থেকে প্রতিদিন সবমিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ডিম উৎপাদন শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের এই প্রজেক্টটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অর্থাৎ মানুষের হাতের সংস্পর্শ ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের বেল্টের মাধ্যমে ফিডিং, ড্রিংকিং ও Manure ক্লিনিং ও Egg Plucking স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে হবে। ফলে আমাদের ডিমের গুনাগুন আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

করোনাত্তর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ফেসিলিটিসের আওতায় আমাদেরকে লোন দেয়াতে আমাদের পিছিয়ে পড়া সেক্টর গুলোকে আবারও পূনরুজ্জিবিত করতে পেরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাচ্ছি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক কে। তাদেরই ঐকান্তিক চেষ্টায় আমাদের এই পথচলা অনেকটা সহজ হয়েছে।

আমাদের রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় বড় পুকুর। যেখান থেকে নিয়মিত মাছ উৎপাদনের পাশাপাশি আমরা নতুন করে পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে বায়োফ্লক শুরু করেছি। এছাড়াও নিয়মিত সবজি ও ফলমূল চাষের ক্ষেত্রেও আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে সম্পূর্ণ অগ্রানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের। সর্বোপরি প্রজেক্টের ঘাসগুলোকে মেডিসিন দিয়ে না মেরে আমরা শুরু করেছি সম্পূর্ণ  Natural পদ্ধতিতে Beef Fattening অর্থাৎ প্রজেক্টের উচ্ছিষ্ট ঘাস ইত্যাদিকে কাজে লাগিয়ে একটি সমন্বিত প্রজেক্টের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে আমাদের এই লেয়ার ফার্ম।